আমি ও প্রকৃতি উভয়ই কি নারী?

‘দি ব্রেভ গার্লস’ গত ২৫ নভেম্বর “সিক্সটিন ডেইস অ্যাক্টিভিজম: লেটস স্পিক আপ” ক্যাম্পিং শুরু করে। ক্যাম্পেইন এরই একটি কর্মসূচি আলোচনা সভা। আলোচনা সভার প্রথম পর্ব- ‘আমি ও প্রকৃতি উভয়ই কি নারী?’ বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় জুম ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্ম এবং ফেইসবুক লাইভ স্ট্রিমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে ছিলেন ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গরের ট্রেনিং ফ্যাসিলেটর ও ‘কোভিড‌১৯ সোশাল একশন আইডিয়া: ব্যালকুনি’, একটি সোশল একশন প্রজেক্ট এর উদ্যোক্তা  নুর-এ-ফজলেতুন-নেসা এবং শারমিন আফরোজ তিথি, ‘মেকই ইট গ্রীন’ সোশাল একশন প্রজেক্ট এর প্রতিষ্ঠাতা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা এবং উপস্থাপনা করেন রেনেকা আহমেদ অন্তু, ইয়ুথ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অফ দি ব্রেভ গার্লস।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থাপক রেনেকা আহমেদ অন্তু সকলের কাছে অনুষ্ঠানে বিষয়বস্তু ‘ আমি ও প্রকৃতি উভয়ই কি নারী?’ এর ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। অন্ত তার কথোপকথনে বলেন, সমাজে ঠিক নারীরা যেমন শোষিত এবং অবহেলিত হয় ঠিক তেমনি প্রকৃতি-গাছপালা ও শোষিত এবং অবহেলিত হচ্ছে, তাই নারী ও প্রকৃতিকে একে অপরের প্রতীকী প্রতিচ্ছবি ভেবে এমন নামকরন করা হয়েছে। সে সমাজের সকলের কাছে আহ্বান জানান যেন, নারী এবং প্রকৃতি দুই অস্তিত্বই সমাজে শোষণ ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ বসবাস করে এবং তিনি আশা করেন এই সিক্সটিন ডেইস অ্যাক্টিভিজম ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তারা এই বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে পারবেন।

নুর-এ-ফজলেতুন-নেসা সকলের সাথে তার এই সোশাল একশন প্রজেক্ট ‘ব্যালকুনি’ এর গড়ে ওঠা এবং পথ চলায় গল্প বলেন। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে মেয়েদের প্রতি সহিংসতা কথা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সহিংসতার কোনো নাম হয়না, ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এবং আমাদের স্বাভাবিক জীবন দুটোতেই নারী সহিংসতার হার সমান সমান।’ এছাড়া তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যুবসমাজকে কোনো গ্রুমিং করা হয় না যে কিভাবে ডিজিটাল ওয়াল্ড ব্যবহার করতে হবে এবং তাই সঠিক জ্ঞানের অভাবের কারণে আজ যুব সমাজকে এত সহিংসতায় সম্মুখীন হতে হয়।

শারমিন আফরোজ তিথি বলেন, ‘আমরা যতই  ডিজিটালাইজড হচ্ছি ততই নারীর প্রতি সহিংসতা করার ধরনের মাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ তিনি মনে করেন আমাদের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে নারীদের নিরাপত্তা সর্বপ্রথমে নিশ্চিত করা উচিত। তিনি জানান এ করোনাকালীন সময়ে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে হ্যারাসমেন্ট, বুলিং বেড়ে গিয়েছে। বাস্তব্জীবনের নারী নির্যাতন শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো বিশ্বেই বেড়েছে প্রায় ২০%। এছাড়া তিনি আমাদের সাথে তার সোশল একশন প্রজেক্ট ‘মেকই ইট গ্রীন’ নিয়ে কথা বলেন, তিনি জানান কিভাবে এ প্রযুক্তি গড়ে উঠেছে এবং প্রতিটি মানুষের মনের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে।

প্লান ইন্টারন্যাশনাল এর 21 টি দেশের করা একটি জরিপে আমরা জানতে পারি যে, প্রতি পাঁচজনে একজন নারী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়ে থাকে, যাতে প্রায় ৪২ শতাংশ নারীদের আত্মবিশ্বাসে প্রচন্ড রকমের নেতিবাচক প্রভাব আসে। এ ধরনের পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটানোই দি ব্রেভ গার্লসের অন্যতম লক্ষ্য। দি ব্রেভ গার্লস  নারী এবং কন্যাশিশুদেরকে প্রযুক্তিবান্ধব করে গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যকে সামনে রেখেই “সিক্সটিন ডেইস অ্যাক্টিভিজম: লেটস স্পিক আপ” কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *