বদলে যাওয়া অভ্যেস

-রেনেকা আহমেদ অন্তু

অভ্যেস অদ্ভুত একটা ব্যাপার, হুটহাট করেই পাল্টানো যায় না!
শুরুর দিকে; যাকে বাদে মাথায় আর কোনো কিছুই আসে না,
সময়ের পালাক্রমে সেই নামটাই আর নেয়া হয় না!
এই 'মনে পরা' কিংবা বা 'না মনে আসা', দুটোই আসলে অভ্যেস।

অভ্যেস আসলে মন্দ জিনিস নাহ।
যে বন্ধনের ইন্তেকালের সময় এসে যায়; 
অভ্যেস দিব্যি তাকে আরো কয়েকমাস আইসিইউতে জিয়িয়ে রাখে।
শুরুর দিকে এই জিয়িয়ে রাখাটা বড্ড তিক্ততা দেয়,
দিনশেষে আস্তে আস্তে সব তিক্ততা কমে আসে। 
অভ্যেসটাও দিব্যি বদলে যায়।

একদিকে ভালোই হয়! তিলে তিলে, আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলার মাঝে একটা দারুন সুবিধে আছে। 
হুট করে স্মৃতি রোমন্থন করার জ্বালাতন থাকে না।
হুটহাট একটা "নেই নেই ভাব" বিরক্ত করে না।
আসলে বিষাদের কোটা অই "তিলে তিলে সরে যাওয়ার" কালেই পূর্ন হয়ে যায়!
অতএব, লং-রানে আর কোনো হুটহাট বিষন্নতা কিংবা দীর্ঘশ্বাসের জ্বালাতন নেই।

তিলেতিলে অভ্যেস বদলে নেবার আরো নানা সুবিধে আছে!
চোখে দারুন এক শীতল স্নিগ্ধতা আসে।
হুট করেই এ স্নিগ্ধতাকে অন্য কোনো অস্তিত্ব দুমড়ে মুচড়ে দেবার ধৃষ্টতা দেখায় না।
তিলেতিলে হারিয়ে ফেলা জিনিসের প্রতি বাড়তি মায়া থাকে না।
আকাংক্ষা কিংবা জেদও কাজ করে না।

অভ্যেস আসলে "প্রয়োজন"কে দারুন আতিথেয়তার সহিত "প্রিয়জন" করে তুলে। হুট করে প্রিয়জন হারালে দুঃখ লাগে। 
তবে ধীরে ধীরে সরে এলে "প্রয়োজন" বোধটা আর তেমন তাড়না দেয় না। 
সুতরাং, নানান ব্যস্ততার মরীচিকা, 
সেসকল অহেতুক অপ্রয়োজনীয় "প্রয়োজন" গুলোর কপালে আর "প্রিয়জন" এর ন্যায় পাত্তা জুটে না।
অভ্যেসের আর সেই জোর থাকে নাহ!!
এমন অভ্যেসগুলোর ইন্তেকালকে শান্তচোখে বিদায় জানানো যায়।
কোন ইন্দ্রিয়র ওপর বাড়তি চাপ আসে না।

মস্তিষ্কে অভ্যেসগুলোর পুনঃজাগরনের আশা জন্মায় না।
হয় না পুনঃ বিনিয়োগের ইচ্ছে কিংবা পূর্ববর্তী বিনিয়োগের আফসোসও।
ধীরে ধীরে সরে যাওয়া অভ্যেসগুলোর সাথে দিব্যি তিক্ততাবিহীন সংসার করা যায়। চাইলেই হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *