হঠাৎ করে শাহীনা সুলতানা লক্ষ্য করেন তার দশ বছর বয়সী ছেলে রাতুল সব ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলছে । প্রথমে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব না দিলেও সময়ের সাথে সাথে মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় তিনি রাতুলের সাথে কথা বলে দেখেন । এমন না যে রাতুল কোন কিছু পাবার জন্য বা শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য মিথ্যা কথা বলছে , সে কোন কারণ ছাড়াই বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলছে এমন একটা অবস্থা ।কিছুদিন আগে ফেমিলি প্রোগ্রামে গিয়ে “বাবা আম্মুর মোবাইল ছুঁড়ে মেরেছে ” বলে সবার সামনে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছিল । আসলে এমন কোন কিছুই হয়নি । অনেক জিজ্ঞাসা করার পর বলল সে একটি কবিতায় পড়েছিল – “দাদার হাতে কলম ছিল ছুঁড়ে মেরেছে , ওহ বড্ড লেগেছে” এমন একটি লাইন, তাই তারও এমন একটি কথা বলতে ইচ্ছা হয়েছে । শাসন করে বা বুঝিয়েও কোন লাভ না হওয়ায় রাতুলকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান । তিনি সমস্যাটিকে প্যাথলজিকাল লাইং বা মানসিক সমস্যার কারণে ক্রমাগত মিথ্যা বলার সমস্যা বলে অবহিত করেন ।
প্যাথলজিকাল লায়ারের লক্ষণ –
*তারা কোন কিছু পাওয়ার লোভে বা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা বলে না , অকারণেই ক্রমাগত মিথ্যা বলে ।
*তারা মিথ্যা বলার জন্য নিজেকে দোষী ভাবে না ।
*অনেক সময়ই তারা মিথ্যা কথা বলার বিষয়টি অস্বীকার করে ।
*তারা প্রায়ই এমন কোন অভিজ্ঞতা বা অর্জনের কথা বলে বাস্তবে যার কোন ভিত্তিই নেই ।*অনেক সময় নিজেকে ভিকটিম দেখিয়ে বানিয়ে বানিয়ে গল্প করে তাদের বানানো গল্পগুলো অনেক সময় অনেক বড় এবং বিস্তারিত বর্ণনা সহ থাকে।
*তারা একই গল্পকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
প্যাথলজিকাল লায়াররা অনেক ক্ষেত্রে অনেক ভাল গল্প বক্তা বা উপস্থাপক হন । এই সমস্যার সাথে অন্য অনেক মানসিক সমস্যার যেমন – নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজ অর্ডার , বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ইত্যাদির সংযোগ থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করেন । তবে মিথ্যা কথাগুলো যেহেতু কোন উদ্দেশ্য নিয়ে বলা হয় না তাই তাদের সাথে ধৈর্যশীল আচরণ করা উচিত ।
রেফারেন্স:
১.https://www.medicalnewstoday.com/articles/pathological-liars#coping-methods
২.https://www.healthline.com/health/pathological-liar#fascination
লেখক – প্রফুল্ল নক্ষত্র