নারীর সুস্থতা ও সমাজের ভাবনা

সাহসী কন্যা ও দুরন্ত ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে শুক্রবার (২৮ মে) বেলা ১১টায় বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য ও জাতীয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে ‘নারীর সুস্থতা ও সমাজের ভাবনা’ শীর্ষক জনসচেতনতামূলক অনলাইন আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনের বিশেষ সহযোগিতায় ছিল অনন্যা ১৮ প্রভা- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন ‘এম্পাওয়ারিং দ্যা ব্রেভ গার্লস প্রজেক্টের’ এর দল নেতা ও প্রকল্প ব্যবস্হাপক রেনেকা আহমেদ অন্তু। অতিথি হিসেবে ছিলেন ড. সাহলা মেহজাবিন, সহকারী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ, ড. সিরাজুল ইসলাম খান মেডিকেল কলেজের এবং এসআরএইচআর লেখক, নুজহাত জাহান খান, রেড ওরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন। নব্বই মিনিট দৈর্ঘ্যের এ আলোচনা সভাটি জুমের মাধ্যমে ফেসবুক লাইভ করা হয়। আলোচনায় দর্শকদের সরাসরি কমেন্ট এবং পেইজে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবার ব্যবস্থা ছিল।অনুষ্ঠানের শুরুতে সঞ্চালক রেনেকা অতিথিদের পরিচয় দেবার মাধ্যমে তাদের নিকট মাসিককালীন সুস্থতার গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান। প্রথম বক্তা ড. সাহলা মেহজাবিন প্রথমেই মাসিক স্বাস্থ্য ও নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০২১ এর মূল প্রতিপাদ্য ‘more action and investment in menstrual hygiene and health now’ এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যের প্রতি বেশি সচেতন থাকতে বলেন। তিনি একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে লাইভে মাসিক স্বাস্থ্য কেন জরুরি এবং এ নিয়ে রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বিক নানা পলিসি ও অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন। তিনি স্যানিটারি প্যাড বা মাসিক এর সময়ে ব্যবহৃত কাপড় সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানান। তিনি মাসিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যের স্বমন্বয় নিয়েও বিশদভাবে আলোচনা করেন।পরবর্তীতে দ্বিতীয় বক্তা নুজহাত জাহান খান সমাজে নারীদের জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য এবং মাসিককালীন অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে সমাজের বিভিন্ন ট্যাবু নিয়ে পুরুষতন্ত্রের নানা প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে মাসিক সম্পর্কে খোলাখুলি ভাবে কথা বলতে না পারাকেই অন্যতম বড় বাধা বলে অভিহিত করেছেন।। এছাড়া স্কুল-কলেজ, কর্মক্ষেত্রে স্যানিটারি প্যাডের অপ্রতুলতা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্যানিটারি প্যাডের মূল্য নির্ধারণে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব ও উপযোগিতার কথা ব্যক্ত করেন।অতিথিরা তাদের আলোচনার কয়েকবার করে মাসিক সম্পর্কিত নানা কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করে এবং শেষ পর্যায়ে ড. মাহজাবিন দর্শকদের প্রশ্ন-উত্তর পর্ব নিয়ে নিজের পরামর্শ জানান। সবশেষে, সমাজের সবস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে কুসংস্মুকারমুক্ত সমাজ গঠনের আশাবাদ ব্যক্ত করে সঞ্চালক ও অতিথিরা আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *