জয়ন্তীর সাথে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে পরিচয় হয়,একদিনের পরিচয় যে এতোটা দূর গিয়ে পৌঁছাতে পারে আমাদের কারই জানা ছিল না! এমন লক্ষী মেয়ে আমার চায়ের কাপে ভাগ বসাবে কিছু আচ করতে পেরেছিলাম আগেই,একই কাপে চলছে আমাদের হাজারো চুমুক মাসের পর মাস! আজকাল খুব মিস করি তার হাতের স্পেশাল পায়েস,বার বার বলতো তোমার জন্য সিক্রেট রেসিপি কেউ বানাতে পারবে না!আসলেই তাই ছিলো…. আমাদের রোজই শহরের অলিগলিতে দেখা যেত,কখনো সদরঘাট, আবার কখন রায়সাহেব বাজারের গলিতে ইচ্ছে হলে টিএসসি চলে আসতাম।আজকাল আর আমাদের কোথাও দেখা যায় না ,জয়ন্তীর সাথে শেষ কথা হয়েছিল হসপিটালের বেডে,”তুমি ভালো থেকো প্রিয়” একটাই শব্দ যেন বেঁচে আছে আমার কাছে।হঠাৎ একা করে আমায় চলে যাবে তা মেনে নিতে আজও কষ্ট হয়,জয়ন্তী কে আমি অয়ন্তী বলে ডাকতাম, অয়ন্তীর ছোট ছোট অক্ষরের চিঠি টা অনেক দিন পর আজ বের করলাম…. আজ তার ২৪ তম জন্মবার্ষীকি , আর সে কিনা তার ছোট নিশ্চিন্তপুর গ্রামে ঘুমিয়েছ আছে! প্রিয় মানুষটির সময়কাল যে এতোকম হবে আজ ও চোখ নিশ্চুপে ভিজে যায়! বাংলাবাজারে নতুন বইয়ের গন্ধ শুনতে কেউ আর তারা দেয় না আজকাল ,রাজনৈতিক আলোচনায় কত চায়ের কাফ ফুরিয়ে যেত বিল দেওয়ার সময় তা টের পাওয়া যেত। প্রতি মাসে আমাদের তিনটি করে নতুন বই কেনার কথা ছিল, সে চলে যাবার পর এখনো ও তিনটি করে বই কিনি তার অয়ন্তীকা লাইব্রেরি জন্য।চোখে কালো ফ্রেমের চশমার আড়ালে ঘন কালো কাজলে মোড়া বড় চোখদুটো থেকে নিশ্চুপের জল আজ ও আমায় ভাবায়,সে দিনই বুঝিছিলাম চোখের জলের ভাষা কতটা কঠিন হয়…. এবারের ব্যস্তায় জয়ন্তীর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে নিশ্চুপে কথা বলা হলো না,এবারের মতো দুঃখিত,প্রিয় ভালো থেকো,শীগ্রই আসছি তোমার সাথে দেখা করতে।
লেখক – জাহিদুল ইসলাম